মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন

সতর্ক বিজ্ঞানীরা, ওমিক্রনের সাবভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টারঃ / ৭০ বার
আপডেট টাইমঃ মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন

ভ্যারিয়েন্টে সাধারণ ধরন বিএ.১ হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের মোট সংক্রমিতের বেশিরভাগ এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। সংক্রমণের তীব্রতা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধির পর অনেক দেশেই তা চূড়ায় পৌঁছে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ওমিক্রনের খুব কাছাকাছি বিএ.২ বলে পরিচিত ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্নস্থানে বিএ.১-কে হটিয়ে দাপুটে হয়ে উঠছে বিএ.২। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

‘স্টেলথ’ সাবভ্যারিয়েন্ট

বৈশ্বিকভাবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি ভাইরাস ট্র্যাকিং ডেটাবেজ জিআইএসএআইডি-তে পাঠানো সিকুয়েন্স করা নমুনার ৯৮.৮ শতাংশই বিএ.১। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, বেশ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি বিএ.২ সাবভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ার কথা জানিয়েছে।
এছাড়া বিএ.১ ও বিএ.২ ছাড়াও অপর দুটি সাবভ্যারিয়েন্ট বিএ.১.১৫২৯ ও বিএ.৩-কে ওমিক্রনের ছাতার নিচে তালিকাভুক্ত করেছে ডব্লিউএইচও। জিনগতভাবে এগুলো খুব ঘনিষ্ঠ। কিন্তু সবগুলোর মিউটেশন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা স্বতন্ত্র আচরণ নির্ধারণ করতে পারে।
সার্স-কভ-২-এর বিবর্তন পর্যবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ফ্রেড হাচিনসন ক্যানসার সেন্টারের কম্পিউটেশনাল ভাইরোলজিস্ট ট্রেভর বেডফর্ড শুক্রবার টুইটারে লিখেছেন, বিএ.২-তে সংক্রমিত ডেনমার্কের ৮২ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের ৯ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৮ শতাংশ। জিআইএসএআইডি’র সিকুয়েন্স করা ডেটাবেজের বিশ্লেষণ এবং ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই দাবি করেছেন তিনি।
ওমিক্রনের বিএ.১ ধরনটি আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর চেয়ে শনাক্ত করা সহজতর। এর কারণ হচ্ছে, সাধারণ পিসিআর টেস্টে যে তিনটি টার্গেট জিন ব্যবহার করা হয়, বিএ.১-এ সেগুলোর একটি অনুপস্থিত। এমন প্রবণতা থাকা নমুনাগুলোকে বিএ.১ বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
স্টেলথ সাবভ্যারিয়েন্ট হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বিএ.২-তে একই টার্গেট জিনের অনুপস্থিতি নেই। ফলে বিজ্ঞানীরা যেভাবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পর্যালোচনা করতেন সেই উপায় কাজে লাগাচ্ছেন। ভাইরাস জিনোমের সংখ্যা চিহ্নিত করে এটিকে শনাক্ত করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপর ভ্যারিয়েন্টগুলোর মতোই বিএ.২ করোনাভাইরাসের ঘরে পরীক্ষার কিটেও শনাক্ত হয়। কিন্তু এতে কোন ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ ঘটেছে তা সম্পর্কে জানা যায় না।

আরও বেশি সংক্রামক?

প্রাথমিক কিছু প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এমনিতেই তীব্র সংক্রমণশীল ওমিক্রনের বিএ.১ ধরনের তুলনায় বিএ.২ আরও বেশি সংক্রামক হতে পারে। কিন্তু এটি টিকার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পাশ কাটাতে পারে বলে এখন পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ডেনমার্কের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ধারণা, বিএ.১-এর চেয়ে বিএ.২ দেড়গুণ বেশি সংক্রামক হতে পারে। প্রাথমিক তথ্যে এমনটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে এতে আক্রান্তদের রোগ গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা কম।
ইংল্যান্ডে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি (এইচএসএ)-এর ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১ থেকে ১১ জানুয়ারি, ২০২২ পর্যন্ত কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের প্রাথমিক বিশ্লেষণে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে বিএ.২ দ্বারা সংক্রমিতদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর হার (১৩.৪ শতাংশ) বেশি।
এইচএসএ’র ২৮ জানুয়ারির প্রতিবেদনে, বিএ.২-এর বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে কোনও পার্থক্য পাওয়ার কথা বলা হয়নি।
শিকাগোভিত্তিক নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. এগন ওজার বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো বিএ.১ ঢেউয়ে আক্রান্তরা বিএ.২-এর সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পাবে কিনা। ডেনমার্কে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দেশটির বিএ.১ সংক্রমণ বেশি থাকা কিছু অঞ্চলে বিএ.২ বাড়ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ওজার বলেন, বিএ.১ সংক্রমণ যদি বিএ.২-এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা না দেয় তাহলে দুই কুঁজযুক্ত উটের মতো ঢেউ দেখা দিতে পারে। তবে তা ঘটবে কিনা তা এখনই বলার সময় হয়নি।
তিনি জানান, সুখবর হলো টিকা ও বুস্টার ডোজ মানুষকে হাসপাতাল ও মৃত্যু থেকে দূরে রাখছে।

সূত্র: রয়টার্স


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *